মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫
সম্পূর্ণ খবর

KM | ২১ এপ্রিল ২০২৫ ২১ : ২৯Krishanu Mazumder
আজকাল ওয়েবডেস্ক: একসময়ে উগা-উগা শব্দব্রহ্মে কাঁপত কংক্রিটের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। দলকে জিতিয়ে উঠে পরিচিত সমর্থকদের দেখলেই দীঘল চেহারার নাইজেরিয়ান ডিফেন্ডার বলতেন, ''উই গননা বিট দেম...আই টোল্ড ইউ না..আই টোল্ড ইউ না।''
উইংয়ে লাল-হলুদ জার্সি পরে পাখির মতো উড়তেন আরেক নাইজেরিয়ান পেন অর্জি। সেই সময়ে সংবাদপত্রে শিরোনাম হত, ''পেন দিয়ে প্রতিপক্ষের শোকগাথা লিখল ইস্টবেঙ্গল।'' টাইম মেশিনের সাহায্য নিয়ে আরও অতীতে যাওয়া যাক।
ব্রাজিলিয়ান ডগলাস দ্য সিলভা স্মৃতিরোমন্থন করে একবার বলেছিলেন, ''আমি তখন সদ্য ব্রাজিল থেকে এসেছি ইস্টবেঙ্গলে। ডার্বি ম্যাচের আগে টানেল থেকে শুনতে পাচ্ছিলাম সমর্থকরা চিৎকার জুড়েছে ডগলাস-ডগলাস।''
এখন যুবভারতীর লাল-হলুদ গ্যালারিতে কোনও পছন্দের বিদেশি ফুটবলারের নাম তো অনুরণিত হতে শোনা যায় না।
স্মৃতির সরণী ধরে হাঁটা যাক ফেলে আসা দিনে। ঘানার তারকা ইউসুফ ইয়াকুবুর খেলা দেখে মোহিত স্ট্যানলি রোজারিও একবার বলছিলেন, ''ইয়াকুবু জাদুকর।'' স্ট্যানলি রোজারিও তখন লেসলি ক্লডিয়াস সরণীর ক্লাবের হেডস্যর।
এখন কোনও লাল-হলুদ সমর্থককে বিস্ফারিত চোখে বিদেশি ফুটবলারের প্রশংসায় মেতে উঠতে দেখা যায় না। আইএসএলে ইস্টবেঙ্গল যোগ দেওয়ার পর একমাত্র একজন বিদেশি ফুটবলারের নাম লাল-হলুদের অসংখ্য হোয়াটসঅ্যাপ গ্রপে উচ্চারিত হয়। তিনি ব্রাইট এনোবাখারে। বাকিরা ছাপ ফেলতে ব্যর্থ। নজর কাড়তে পারলেনই না। একক দক্ষতায় ম্যাচ জেতাতে পারলেন না। শিরোনাম হওয়া তো দূর অস্ত। গঞ্জনা হজম করতে হয় তাঁদের।
তুলনায় উঠে আসে তখন আর এখন। এদিনই একটি ইস্টবেঙ্গল গ্রুপে জোর চর্চা চলছিল। গ্রুপের এক সদস্য লিখলেন, ''উগা, পেন, চিডিদের যাঁরা ইস্টবেঙ্গলে এনেছিলেন, তাঁদের অভাব অনুভূত হয়।'' একসময়ে লাল-হলুদের বিদেশি ফুটবলারদের দেখে বিজ্ঞাপনের ক্লিশে হয়ে যাওয়া বাক্যবন্ধনী ব্যবহৃত হত কলকাতা ময়দানে, ''গৃহস্থের গর্ব, পড়শির ঈর্ষা।''
এই ইস্টবেঙ্গলের বিদেশি ফুটবলারদের দেখে অনেক লাল-হলুদ ভক্ত বলেন, ''এদের খেলা দেখে রক্তের গতি বাড়ে না।'' কেন এই অধঃপতন? কেন পিছিয়ে যাওয়া? অস্ট্রেলিয়ান তোলগে, নাইজেরিয়ান এডে চিডি বা অ্যালান গাওদের এই বঙ্গে আনার ভগীরথ ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবল সচিব সন্তোষ (বাবু) ভট্টাচার্য। তিনি অবশ্য নেতিবাচক নন।
বাস্তব চিত্র তুলে ধরে পোড়খাওয়া কর্তা আজকাল ডট ইন-কে বলছেন, ''দুটো সময় দু'ধরনের। এভাবে তুলনা চলে না। এখন খেলার ধরন বদলেছে, কোচেদের স্ট্র্যাটেজিও বদলে গিয়েছে। আমাদের প্রতিপক্ষ দলে এখন অনেক ভাল মানের বিদেশি ডিফেন্ডার এসে গিয়েছে। আবার প্রতিপক্ষের আক্রমণভাগেও এসেছে দারুণ মানের সব বিদেশি ফুটবলার। আগে হয়তো ছবিটা উলটো ছিল। আমাদের প্রতিপক্ষের কাছে ডিফেন্ডার বলুন বা আক্রমণভাগের সেরকম মানের বিদেশি প্লেয়ার হয়তো ছিল না।''
রবিবার সুপার কাপ থেকে প্রথম ম্যাচ হেরেই বিদায় নিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। অথচ গতবার মহানদী তীরে লাল-হলুদ মশাল জ্বলে উঠেছিল। এবার যাওয়ার আগেই তাল কাটে। কোচ অস্কার ব্রজোঁর সঙ্গে সমস্যায় ক্লেটন সিলভা ছাঁটাই হন। খেলা দেখার পরে প্রত্যক্ষদর্শীদের মনে হয়েছে, লাল-হলুদ খেলোয়াড়দের জেতার স্পৃহাটাই হারিয়ে গিয়েছে। কেউ আবার বলছেন, মরশুমের শেষে এসে অনেক সময়ে খেলার ইচ্ছা নষ্ট হয়ে যায়। পা বাঁচিয়ে খেলে অনেকে। সোশ্যাল মিডিয়া ইস্টবেঙ্গলকে নিয়েই সরগরম। লাল-হলুদের ব্যর্থতাই চর্চায় থাকে। বিদেশি ফুটবলারদের প্রশংসার পরিবর্তে নিন্দাই চলে বেশিরভাগ সময়।
ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান এই প্রতিবেদককে বলছিলেন, ''পারথ থেকে আইএসএল দেখা যায় না। আমি ইস্টবেঙ্গলের ৯০ মিনিট খেলা দেখিনি। ফলে আমার পক্ষে এখনকার বিদেশি ফুটবলার নিয়ে মতামত দেওয়া অন্যায় হবে। তবে আমার সময়ে খুব ভাল মানের সব বিদেশি পেয়েছিলাম। স্থানীয় ফুটবলাররাও বেশ ভাল ছিল। আর আমি খুব ভাল মানুষদের সান্নিধ্য পেয়েছিলাম ইস্টবেঙ্গলে।''
সেই সময়ের লাল-হলুদের খেলায় ছিল ঔজ্জ্বল্য। মনে রেখে দেওয়ার মতো পারফরম্যান্স ছিল ইস্টবেঙ্গল সৈন্যদের। দু'জন স্টপারের সামনে পেন্ডুলামের মতো দুলতেন মেহতাব হোসেন। তার পরে দুটো উইংয়ে বল ভাসাতেন। মাঝমাঠের সেই ব্রিগেডিয়ার মেহতাব হোসেন বলছিলেন, ''এদেশের ফুটবলে বিদেশিরাই কিন্তু পার্থক্য গড়ে দেয়। আমি ব্যারেটোকে দেখেছি মোহনবাগানে। আমাদের দলে উগা-তোলগে-চিডিকে দায়িত্ব নিয়ে খেলতে দেখেছি। লিডারশিপ কোয়ালিটি ছিল ওদের মধ্যে। নেতিবাচক কথা বলতে পছন্দ করি না। কিন্তু এখন সত্যি কী যে হচ্ছে বুঝতে পারছি না।''
ইস্টবেঙ্গলের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান আনছে বিশ্বকাপ খেলা ফুটবলার। যে কোনও সময়ে ম্যাচের রং বদলে দেন তাঁরা। লাল-হলুদের প্রাক্তন ফুটবল সচিব বলছেন, ''ভাল মানের বিদেশি ফুটবলার আনতে গেলে আরও বেশি অর্থ খরচ করতে হবে। প্লেয়ারদের রেট এখন অনেক বেড়ে গিয়েছে। এটাও ভাবার বিষয়।''
প্রশ্ন ওঠে সমাজ মাধ্যমে, ''ওরা পারে আমরা পারি না।'' প্লেয়ার চেনার দৃষ্টি, দক্ষতা, দূরদৃষ্টি কোথাও কি কমে যাচ্ছে? মেহতাব বলছেন, ''এখন তো এদেশের ফুটবলে এজেন্ট, সিটিও এরকম গাল ভরা কত সব নাম। কী আর বলব!''
আইএসএলে হতাশার জন্ম দিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। মরশুমের শেষে এসেও সেই হতাশা। সুপার কাপে মেসি বাউলি সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করে বসলেন। কেরালা ব্লাস্টার্সের হয়ে অসংখ্য গোল করা দিমায়ান্তাকোস লাল-হলুদ জার্সিতে এসে পথভ্রষ্ট। গ্রিসের তারকা আইএসএল ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, সতীর্থরা তাঁকে ঠিকমতো বল বাড়াতে পারছেন না। একটা মরশুম কেটে গেল অথচ বোঝাপড়াই তৈরি হল না।
ব্রাজিলিয়ান তারকা ক্লেটন সিলভার পা থেকে হারিয়ে গিয়েছে গোল। চোটের লাল চোখ দেখে মাঠের বাইরে বসেছিলেন তিনি। তার পর কোচের সঙ্গে সমস্যা। সুপার কাপে যাওয়ার আগে খবর হল, সল ক্রেসপোর চোট।
একসময়ে ইস্টবেঙ্গলের বিদেশিদের পায়ে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হত। এখন লাল-হলুদের বিদেশিদের দেখে মন ভরে না সমর্থকদের। সন্তোষবাবু বলছিলেন, ''
কোনও একজনের একটা মুভ দেখে মনে হল দারুণ প্লেয়ার। আবার পরক্ষণেই মিস পাস করে দিল। সেভাবে কাউকে তো মনে ধরল না।''
বেশ কয়েকদিন আগের কথা। আজকাল ডট ইন-কে প্রাক্তন নাইজেরিয়ান ডিফেন্ডার উগা ওপারা বলেছিলেন, ''সাফল্য পেতে হলে আফ্রিকান ফুটবলার আনতে হবে।'' প্রাক্তন সতীর্থের সঙ্গে সহমত পোষণ করছেন মেহতাব হোসেন। তিনি বলছেন, ''আমি উগা ওপারার সঙ্গে একমত। আফ্রিকান ফুটবলার আনা হলে তাঁরা লড়ে যাবে, দায়বদ্ধতাও বেশি দেখাবে। কম অর্থে ভাল মানের প্লেয়ারও পাওয়া যাবে। এতে উপকৃত হবে ইস্টবেঙ্গলই।''
মেহতাবের কথা কি শুনলেন লাল-হলুদ কোচ থেকে কর্তা? শুনলে কিন্তু সন্তোষ ফিরতে পারে লেসলি ক্লডিয়াস সরণীতে।
নানান খবর
নানান খবর

কলকাতা হারল রে, প্লে অফের রাস্তা ক্রমশ কঠিন হচ্ছে রাহানেদের

কেকেআরে ব্রাত্য গিলই তুললেন ঝড়, রাসেল–নারাইন আর কতদিন খেলবেন কলকাতায়?

অবিশ্বাস্য গোল করতেই পছন্দ করেন ভালভার্দে, রহস্য ফাঁস কুর্তোয়ার

বাদ ডি’কক, প্রথম একাদশে গুরবাজ, টস জিতে ইডেনে শুরুতে বোলিং করবে কলকাতা

রোহিতকে রানে ফিরিয়ে শত্রু শিবিরে যোগ দিলেন তিনি, হিটম্যান তাঁকেই জানালেন ধন্যবাদ

অস্কারের হুঁশিয়ারিই সার, কেরালার কাছে হেরে সুপার কাপ থেকে বিদায় ইস্টবেঙ্গলের

আউট হওয়ার ভিডিও দেখিয়ে এ কী ধরনের রসিকতা! বাবর আজমকে তুমুল ট্রোল আইসল্যান্ড ক্রিকেটের, নেটপাড়ায় হাসির রোল

হায়দরাবাদের স্টেডিয়াম থেকে সরে যাচ্ছে তারকা ক্রিকেটারের নামাঙ্কিত স্ট্যান্ড, আইনি লড়াইয়ে ক্রিকেট বিশ্ব তোলপাড়

সাত গোলের ম্যাচ জিতে উঠে দুঃসংবাদ বার্সার জন্য, কী হল স্পেনের ক্লাবের?

অভিষেকেই তিন-তিনটি রেকর্ড, স্বপ্নের শুরু ১৪ বছরের সূর্যবংশীর

মেয়েদের বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে না পাকিস্তান দল, জানিয়ে দিলেন পিসিবির চেয়ারম্যান

শুরুতেই বাজিমাত, আই লিগ টু-তে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন ডায়মন্ড হারবার

কোচের মেয়ের সঙ্গে প্রেম, মাঝে বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ, বিশ্বকাপের সময়ে তারকা ক্রিকেটার জানতে পারেন বিয়ে স্থির করে ফেলেছেন মা

ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে তিন ভাই, খেলছেন ক্রিকেট

তীব্র গরমে দুপুরে ম্যাচ, মোদি স্টেডিয়ামে দর্শকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করল গুজরাট ফ্রাঞ্চাইজি